মোঃ হাবিবুল হাসান হাবিব, ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ নীলফামারী ডিমলা উপজেলার ২নং বালাপাড়া ইউনিয়নের নিজ সুন্দর খাতা হইতে দক্ষিন সুন্দর খাতা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিঃ মিঃ বুড়ি তিস্তার বাঁধটি দেশ স্বাধীনের পূর্বে নির্মিত। ১৯৮৮ সালের প্রাকৃতিক দূয্যোর্গ বন্যার পানিতে বাঁধটি ভেঙ্গে যায়। মরহুম রহিমুদ্দিন খট্টু মিয়ার উদ্দোগে এলাকাবাসীর স্বেচ্ছাশ্রম ও জমির মালিকগনের নিজস্ব অর্থায়নে বাধটি এক সময় বাঁধা হলেও পুণরায় উজানের পানির ঢলে ভেঙ্গে য়ায়। বর্তমানে বাঁধটির ভাঙ্গা অংশ সংস্কারের অভাবে এলাকার কৃষকের জমিগুলো কৃষিকাজে ব্যাঘাত ঘটেছে। দুই যুগ পেরিয়ে গেলেও বুড়িতিস্তা নদীর পূর্বপাশ ঘেষে কচুবাড়ীর দলার বাঁধটি মেরামত করা হয়নি। মেরামত না হওয়ায় নিজ সুন্দর খাতা, মধ্যম সুন্দর খাতা, দক্ষিন সুন্দর খাতা গ্রামের প্রায় হাজার হাজার বিঘা জমি আমন ধান রোপন করতে পারে না এ এলাকার কৃষকেরা। ফলে প্রতিনিয়ত কৃষকেরা অভাব অনটনের মধ্যে মানবেতর দিনাতিপাত করছে। তাই বাঁধটি দ্রুত মেরামতের দাবী এলাকাবাসীর।
আজ সোমবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ১০ টায় সরেজমিনে দেখা গেছে, ডিমলা সদর উপজেলা থেকে ৫ কিঃ মিঃ দুরে বুড়িতিস্তা নদীর পূর্বপাশ ঘেষে বালাপাড়া ইউনিয়নের সুন্দর খাতা মাইঝালীর ডাঙ্গা গ্রামের কচুবাড়ীর দলায় অবস্থিত বাঁধটি। দুই যুগ আগে উজানের পানির ঢলে বাঁধটি ভেঙ্গে যায়। বন্যার পানিতে বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্থ্য হওয়ায় এ অবধি এলাকার গরীব অসহায় কৃষকেরা আমন ধানের চারা রোপন করতে পারে না। ইরি ধান মৌসুমে ধান চাষাবাদ করলেও ইরি ধানকাটা মৌসুমে বুড়িতিস্তা নদীর পানি বাঁধটির ভাঙ্গা অংশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ফসলি জমিতে ঢুকে পড়ে। এতে ইরি ধান মৌসুমে চাষাবাদকৃত পাঁকা ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে মধ্যম সুন্দর খাতা মাঝিয়ালীর ডাঙ্গা বিদ্যায়লয়টির মাঠ বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ার ফলে বিদ্যালয়টির ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়। বাঁধটি বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়ায় সুন্দর খাতা কচুবাড়ীর দলা হইতে খোকসারঘাট ব্রীজের উজানের জমিগুলো আমন মৌসুমে চাষাবাদের অনুপযুক্ত। জমিগুলোতে এক ফসলি চাষাবাদ করে এ এলাকার কৃষকেরা দৈনন্দিন মানবেতর ভাবে জীবন যাপন করে আসছে। কৃষকদের অধিকাংশ জমিগুলো গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় বাঁধ নির্মানের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় জমির মালিক সাবেক সংসদ সদস্য এন,কে আলম চৌধুরী, সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়েদুল আরেফিন দুলাল, এনামুল হক সেলিম, সারোয়ারে আলম রাজা, নুরল আলম মানিক, আবু ইউছুফ আলী, জাহাঙ্গীর, আবু রায়হান, আব্দুল হামিদ, বকুল হোসেন, কামরুল হাসান হেলাল, আশরাফ আলী, সুলতান আলী, জমসের আলী, মিজান, সায়েদ আলী দুলু, সহিদ হোসেন, গোলাম হোসেন, পাষান, আহম্মদ আলী, কাইয়ুম, ওফাজ, নহম, পাইলট, জাবেদ হোসেন, শফিকুল ইসলাম সবুজ, আব্দুল মজিদ, ডলার, ইব্রাহিম হোসেন, সামছুল হক, আমিনার রহমান চুনু, শাজাহান আলী, ইব্রাহিম আলী, সফিজ উদ্দিন, লাল মিয়া, আবুল হোসেন, আফজাল হোসেন, মোশারফ হোসেন, তফির উদ্দিন, নজরুল ইসলাম পল্টন, আবু তালেব, সহিদুল ইসলাম, আব্দুর রশিদ, পরেশ চন্দ্র, দেবেন্দ্র নাথ রায়, নির্মল চন্দ্র রায় ও আনছার আলী জানান বুড়িতিস্তা নদীর বাঁধটি দুই যুগ আগে বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে আমাদের জমিগুলোতে আমন ধান রোপন করতে পারি না । যদিও কৃষকেরা জমিগুলোতে হালচাষ করে আমন ধান রোপন করে বর্ষা মৌসুমে বুড়িতিস্তা নদীর পানি ঢুকে আমন মৌসুমে রোপনকৃত ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়। দেশের খাদ্য চাহিদার বৃহৎ স্বার্থের কথা বিবেচনা করে বুড়িতিস্তা নদী খনন ও বাধটি মেরামত করলে এলাকার কৃষকেরা উপকৃত হবে।
বিশিষ্ট সামজ সেবক ও জমির মালিক শাহ আলম জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা ও
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বুড়িতিস্তা নদী খনন ও
বাঁধটি সরকারী বরাদ্ধে মেরামত করা হলে বাঁধের ভাটির জমিগুলোতে এ এলাকার জমির মালিকগন আমন ও ইরি
মৌসুমে দুই ফসলের ফসল নির্ভয়ে ঘরেতুলতে পারবে, জমিগুলো এক ফসলি থেকে দুই ফসলে রুপান্তরিত হবে।
২নং বালাপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ জহুরুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, বুড়িতিস্তা নদীর বাঁধটি ভেঙ্গে যাওয়ায় এ এলাকার কৃষকেরা আমন ধান রোপন করতে পারে না। বন্যার কবল হইতে বাঁধটি মেরামত করা জরুরী প্রয়োজন আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে বাঁধটি মেরামতের কথা তুলে ধরব। আগামীতে দ্রুত সময়ে বাঁধটি মেরামত করা হলে এলাকার কৃষকের দূঃখ লাঘব হবে। জমিগুলো এক ফসলি থাকবে না । এ এলাকার কৃষকেরা ইরি ধানের উপর আর নির্ভরশীল না থেকে আমন মৌসুমে যাতে জমিগুলোতে ধান রোপন করতে পারে সে জন্য মাননীয় সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ আফতাব উদ্দিন সরকারের কাছে দৃষ্টি আর্কষন করছি ।
এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ সেকেন্দার আলী বলেন, বাঁধটি মেরামত হলে জমিগুলোতে আমন ধান রোপন করা সম্ভব। স্থানীয় কৃষকের খাদ্য চাহিদা মিটেয়ে দেশের জনগনের খাদ্য চাহিদা পুরন করতে সক্ষম হবে এবং দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে এ এলাকার কৃষকেরা সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।
Post a Comment